কবিতা- ঘরে বাইরে

ঘরে বাইরে (লিমেরিক)

-কজল দাস 

 

 

চলো যাই চুপিচুপি পুকুরের ধারে
সর্ষের ক্ষেতে আর নদীর কিনারে
ঘরে বসে লাভ নাই
চলো ঘুরে আসি ভাই
বনে বাদারে আর ঘন ঝোপঝাড়ে। 

মিছে কেন বারবার করো ডাকাডাকি?
এখনো অনেক খানি পড়া আছে বাকি
বাবা যদি শোনে ভাই
এক্কেবারে রেহাই নাই
তার চেয়ে তুমি যাও- আমি ঘরে থাকি।

সারা দিন থাকো বসে ঘরের ভেতরে
পাখিরাও ঘরছাড়া সেই কোন ভোরে
চলো আমরাও ঘুরে আসি
রঙিন ডানায় ভাসি
রোদ মেখে সারাদিন সোনালী দুপুরে

কি করে যাব বলো আকাশের কাছে
অনেক কাজ যে বাকি পড়ে আছে
ঘর বন্দি নীলাকাশে
সূয্যি ডোবে জানলা ঘেঁষে
ইচ্ছে গুলো অন্ধকারে মুখ থুবড়ে বাঁচে

অজুহাত যত তোমার, বড়দের মত
খোলো সব ছিটকিনি দরজার যত
খেজুর গাছে ডাহুক ডাকে
জাম জামরুল পাতার ফাঁকে
ঘর বন্দি থাকবে যে আর কতো?

দ্যাখো আমার ঘরেও আলোর শাখে
কতো ছায়ার পাখি- দেয়ালে ডাকে
গাছ- গাছালি, নদী- পাহাড়
হাজার রকম ফুলের বাহার
ইটের ভাঁজে দেয়াল জুড়ে থাকে।

ধুর- তা…ও কি আবার হয় নাকি রে
দেখি আন’তো একটা গোলাপ ছিঁড়ে
কোথায় দেখি ছায়ার পাখি
করছে না তো- ডাকাডাকি
অন্ধকারে বন্ধ দ্বারে থাকবে সে কি করে। 

সত্যি বলছি, মিথ্যে নয় গো মিথ্যে নয়
মনের পাখি মনের চোখেই দেখতে হয়
চোখ বুজলেই অন্ধকার
তাই বলে কি হয় আঁধার!
আকাশ গঙ্গা, আসলেই কিন্তু গঙ্গা হয়?

বেশ তো- তাই যদি হয়, -হোক তবে
ফুল ফুটে থাক তোমার মনের সৌরভে
ভালো থেকো তুমি নির্জনে
মিছে কল্পতরুর উঠোনে
পড়লো বেলা, এবার আমি যাই তবে।

যেওনা এভাবে, যেওনা আমায় ফেলে
আমি খুব যে একা- তুমি চলে গেলে
তোমার চোখেই দেখতে চাই
খোলা আকাশ কেমন ভাই
কেমন করে ওড়ে ডাহুক উরন্ত মিছিলে। 

তবে যাই চলে যাই দূর দেশে
এই জানালা ভেঙে একপেশে
আকাশ যেথা অকৃপণ
উদার যেথা সবুজ বন
দূর জঙলা নদীর পাড় ঘেঁষে।

চলো বাঁধন ছেঁড়া রোদ জুড়ে (দ্বৈত কণ্ঠে)
চলো- যাই উড়ে যাই খুব দূরে,
যেথায় যেতে নেই মানা
হাজার রঙের কল্পনায়
আজ ইচ্ছে ডানায় ভর করে।

Loading

One thought on “কবিতা- ঘরে বাইরে

Leave A Comment